কোথায় ছিলে এতদিন
কাজী মোহাম্মদ শিহাবুদ্দীন
যে দিন তোমায় প্রথম দেখেছিলাম তখন দিনটা ছিল খুব ঠান্ডা আর কুয়াশাচ্ছন্ন। সকালে মা হঠাৎ চেঁচিয়ে বলল, কিরে কতক্ষণ ধরে ডাকছি এখনো ঘুম ভাঙ্গছে না কেন?বন্ধ পেলে এই ভাবে ঘুমাতে হয়! এখন বাজে কটা?
ঘড়ির কাটায় তখন ৮ টা বিশ কি তেইশ বাজে
আমি একটু আলস নিয়ে বললাম মা! কি শুরু করলা? একটু ঘুমায়তে ও দিবা না? আজি তো ঘুমাচ্ছি।
মা রাগিয়ে বলে প্রতিদিন যে তোর জন্য এত তাড়াতাড়ি উঠি! এত কিছু করি, কই একদিন ও তো দেরী করলাম না!!
আচ্ছা মা তুমি না হয় নাস্তা করে নাও, আমি ঘুমায়,
কি বলেছিস! তুই, আজ না উঠলে আমি কিছুই খেতে পারব না।।
উফফফ কেন বিরক্ত করছো মা! আচ্ছা, দাড়াও উঠছি।
হাত মুখ ধুয়ে গেলাম মায়ের কাছে নাস্তা করার জন্য।
বলি মা নাস্তা দাও।
মা তখন হাসিয়ে বলেন,বাবা আজ ভাবছি তুই ঘরে আছিস, তাই আমি রুটি বানাবো না। তুই একটু কষ্ট করে দোকান থেকে নিয়ে আয় না।
রাগটা তখন চরম।
তারপরও মা তো রাগা কি আর যায়?
আচ্ছা দেন বলে মন খারাপ করে দোকানের দিকে ছুটলাম। আর ভাবলাম মা আজ পুরো সকালটা শেষ করে দিলো।কি সুন্দর ঘুম হচ্ছিলো, কিন্তু কে বা জানত সে দিন আমার সবচেয়ে সেরা দিনটা হবে
খুব বিরক্তি নিয়ে রাস্তায় হাটছি হঠাৎ আমার সামনে দিয়ে একটা মেয়ে কুয়াশার সাথে একা একা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হাটছে।যেই দেখা সেই ভাল লাগা হয়ে গেল। এর পর থেকে বাসার দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতাম কখন সে আসবে।কিছু দিন যাওয়ার পর একদিন সেই এসে বলল এই যে শুনছেন?
হ্যা বলেন?
আমি না রাস্তায় ব্যাগ হারিয়ে ফেলেছি,নাকি ঘরে রেখে এসেছি বুঝছিনা, আপনি যদি একটু হেল্প করেন মানে আমার রিক্সা ভাড়া দেন, আমি আপনারে কিছুক্ষণ পর বাসা থেকে এনে দিব।
ও হ্যা অবশ্যই।
এই বলে গাড়ি ভাড়া দিলেম।সে আমার নাম্বারটা চেয়ে নিল।
বললো আপনার নাম্বারটা দেন। আমি টাকাটা এনে আপনাকে ফোন দিচ্ছি।
আমিও দিয়ে দিলাম।
প্রায় আধঘণ্টা পর সে টাকা ফেরত দিয়ে গেল। আমাকে আর ফোন দিল না। যেহেতু আমি দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলাম।
এরপর প্রায় হাই হ্যালো চলতে থাকে দেখা হলে। তবে আমি আর আগের মত তার রাস্তায় দাড়ায় না, কারণ একটা লজ্জা এসে গেছে। ও পরিচিত হয়ে গেল তাই।
কিন্ত কিছু যাওয়ার পর ভার্সিটির চাপ ও বেড়ে গেল,খুব ভোরে চলে যাওয়া আর রাতে দেরী করে আসাতে ওর সাথে প্রায় এক মাস দেখা হয় না।
হঠাৎ অচিন নাম্বার থেকে একটা ফোন আসে
হ্যালো
হাই, আপনি তো?
হ্যা আমি তবে কে আপনি? কাকে চান?
আপনাকেই চাচ্ছি আর আমি আমিই!
পরিচয় দেন?
পরিচয় না দিলে কি কথা বলবেন না?
না!
আমি পরিচয় দিলে ও তো আপনি চিনবেন না!
দিয়ে তো দেখেনন!
আমি মেঘলা আর আপনি?
ওমা আপনি আমাকে চেনেন না?
চিনি, দেখেছি তবে, নাম জানি না আর আপনিও আমাকে চেনতে পারছেন না? কি আর করব রাখি তাইলে!"
আরে না, চেনার মত আর কোন পরিচয় থাকলে দেন?আর আমার নাম্বার ফেলেন কোথা হতে?
নাম্বার আপনি নিজেই দিয়েছেন!
আমি! কেমনে কি!
হ্যা আপনি। আচ্ছা চেনার মত একটা পরিচিতি আছে!
কি বলেন দেখি?চেনা যায় কিনা?
ওই যে আপনার কাছ হতে টাকা নিয়েছিলাম ধার।ওই মেয়েটা।
ও আচ্ছা চিনেছি, কি অবস্থা? কি মনে করে ফোন দিলা?
ভাল আছি আর আপনি? কোন প্রব্লেম এ নাই তো!
না, কেন?
এইতো কদিন ধরে দেখছি না তাই।
ও আচ্ছা আসলে একটু ব্যাস্ত আছি তাই।
আচ্ছা সময় হলে একদিন দেখা করবেন?
হ্যা নিশ্চয়।
তারপর দেখা করলাম, ঘুরাফিরা করলাম,ফেরার সময় সে বলে।
আচ্ছা আপনাকে কি তুই বলা যাবে?
মানে কি? কেন?
আপনাকে খুব ভাললাগে তাই।
এই ভাল লাগা প্রেম পর্যায়ে চলে আসে আসে।
এই ভাবে চলতে থাকে আমাদের সব।কিন্তু হঠাৎ একদিন তার ফোনে কল দিলাম, তবে কল যায় না। আমি ভাবলাম সাধারণ কিছু হবে হয়ত তবে এই কল প্রায় এক সাপ্তাহ যাবৎ বন্ধ থাকে। খুব চিন্তাই পড়ে গেলাম। তারপর একদিন কোথাও গেলাম না তাএ অপেক্ষায় থাকি আগের জায়গায়। তবে সে ওখানে ও এলো না। তাই সোজা হাটা দিলাম তার ঘরের দিকে। খোজ নিয়ে জানতে পারলাম তারা ৪ দিন আগে বাসা ছেড়ে চলে যায়।
অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে আর পাওয়া গেলনা।কারণ তার সাথে যোগাযোগ এর মাধ্যম ছিল মোবাইল। তা আজ অফ.
অনেক বার ফোন আর ম্যাসেজ দিয়েছি, তবে কোন উত্তর আসে নাই তাই প্রতি দিন তার কোননা কিছুর অপেক্ষায় ছিলাম তবে পাই নি কিছু, এইভাবে কেটে যায় দিনের পর দিন,তারপর বছরের পর বছর।
এইগুলো তো পাঁচ বছর আগের কথা।
আজ আবার মা এসে বলে, ওরে আমার বাবাটা! তোর লেখাপড়া হতে সব কিছু গেল আমার হাতের উপর।জানিস আমি এখন বুড়ি হয়ে যাচ্ছি,হাতের কাজ আর উঠে না! আর তুই এখন চাকুরী করছিস ভালো। তবে আমাকে একটু মুক্তি দিবি?
:বুঝি নাই মা, কি বলছো?
:আমি না,আর তোকে রান্না করে খাওয়াতে পারব না,আমি দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।
:ও, সরি মা, এখন থেকে দোকান থেকে প্রতিদিন খাওয়ার নিয়ে আসব, ওকে?
:না,আমি দোকানের খাবার খাই না বাবা।
:তাহলে একটা কাজ করো, কাজের বুয়াকে বলব রান্না করে দিতে।
:উফফফ বুঝিস না কেন? আমি নিজেই রান্না করতে অক্ষম নয়।সব রান্না তো আমিই করব।
:তাহলে?
:আরে আমার একটা সঙ্গি দরকার।
:সঙ্গি! আপনার পুরাতন বান্ধবী কারো নাম্বার থাকলে দিও, এদের সাথে যোগাযোগ করব। একদিন বেড়াতে আসতে বলব।
:আরে বোকা তা না।আমার ছেলের বউ আমার সবচেয়ে বড় সঙ্গি হবে। সেই মিষ্টি মামুনিকেই আমি চাই।
:মা,প্লিজ! এখন এইসব কথা বাদ দাও না!
:না বাবা অনেক হয়েছে।আর না গত দুই বছর ধরে তোকে রিকুয়েস্ট করেই যাচ্ছি, আর না। আমি নিজেই নিয়ে আসব, নাকি পছন্দ আছে?
থাকলে বল আমি প্রস্তাব পাঠায়।
:মা প্লিজ আমার কিছুই নাই।
:তুই কি আমার দুঃখ বুঝবি না বাবা ? আমি ক দিন আর বাঁচব বল?
:আচ্ছা মা, তোমার ইচ্ছে যা হয়, কর।
:ওকে বাবা
তার পরের দিন মা আমাকে উনার পছন্দ একটা মেয়ে দেখে আসতে বলল।আমি মাকে বললাম আমার দেখা লাগবে না উনার পছন্দ আমার পছন্দ।
তারপর আমাকে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়।আমি গেলাম। সবাই বসে আছে, খুব হাসাহাসি করছে তবে আমি ভাবতে লাগলাম জীবনে যাকে ভালবাসিলাম তারে তো পেলাম না।কেন যে সে এলো আমার জীবনে, না আসলে কি হত!
আচ্ছা যাক পাত্রী এল আমি নিচের দিকে থাকিয়ে আছি। মা কানে কানে বলল বাবা পাত্রী তোর পছন্দ হয়েছে? আমি হ্যা সূচক উত্তর দিলাম যদিও বা আমি মেয়েটিকে একটি বার ও দেখি নাই। মা বলেন, আমারো পছন্দ হয়েছে, ধর আংটি পড়িয়ে দেয়।হাতে আংটি ধরিয়ে দিল।আমি কার্ন্নাথ চোখে আংটি পড়িয়ে দিতে গেলাম,আর ওর হাত ধরলাম তারপর..
আমি চমকে উঠি,কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমি থ হয়ে যায়।কারণ যে মেয়েটি ঘুমটা তোলেছে, আর যাকে আমি আংটি পড়াচ্ছি সে আর কেউ নয় সে আমার.
স্বপ্ন ও ভাবি নি তোকে আজ পাব!
মা কই পেলা ওকে?
:আরে বোকা আমি তো মা, বুঝিতো আমার বাবুটা কি চাই।
দেখ আমি প্রায় দেখতাম তুই ওর জন্য মন খারাপ করে আছিস। তবে একদিন ওর বাবার চিঠি পেয়ে আমি ওদের ঘরে এসেছিলাম কারণ ওখানে লিখা ছিল,"মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে ফেলতে চেয়েছিলাম, মেয়ে রাজি হচ্ছে না,সে বলেছে প্রান যাবে তবে এই ছেলেকে ছাড়া অন্য কারো সাথে বিয়ের আসরে বসবে না।"
তাই আমি ভাবলাম যে মেয়ে আমার ছেলের জন্য নিজের প্রাণ দিতে চাই,তাকেই আমার ঘরের বউ য়ে মানায়। ঘরের লক্ষি ঘরে মানায় অন্য জায়গায় না।আর মেয়েটাকে দেখে আমার মনে হল আমার ছেলের পছন্দ খুব ভাল, ঠিক আমার মনের মত। তাই নিয়ে আনার প্রস্তুতি নিলাম।এতোদিন চেয়েছিলাম তুই কিছু বলবি সেই আশায়, কই তুই একবার ও তো বলিস নাই!!!
:মা ওকে অনেক খুজছিলাম তবে পায় নাই.
তাই তোমাকে কি করে বলব বুঝতে পারছিলামনা।
এই কোথায় ছিলি তুই!!অনেক খোঁজেছি তোকে.
কেমনে পারলি আমায় ছেড়ে যেতে.
কেমনে পারলি আমায় ছেড়ে থাকতে
কাজী মোহাম্মদ শিহাবুদ্দীন
যে দিন তোমায় প্রথম দেখেছিলাম তখন দিনটা ছিল খুব ঠান্ডা আর কুয়াশাচ্ছন্ন। সকালে মা হঠাৎ চেঁচিয়ে বলল, কিরে কতক্ষণ ধরে ডাকছি এখনো ঘুম ভাঙ্গছে না কেন?বন্ধ পেলে এই ভাবে ঘুমাতে হয়! এখন বাজে কটা?
ঘড়ির কাটায় তখন ৮ টা বিশ কি তেইশ বাজে
আমি একটু আলস নিয়ে বললাম মা! কি শুরু করলা? একটু ঘুমায়তে ও দিবা না? আজি তো ঘুমাচ্ছি।
মা রাগিয়ে বলে প্রতিদিন যে তোর জন্য এত তাড়াতাড়ি উঠি! এত কিছু করি, কই একদিন ও তো দেরী করলাম না!!
আচ্ছা মা তুমি না হয় নাস্তা করে নাও, আমি ঘুমায়,
কি বলেছিস! তুই, আজ না উঠলে আমি কিছুই খেতে পারব না।।
উফফফ কেন বিরক্ত করছো মা! আচ্ছা, দাড়াও উঠছি।
হাত মুখ ধুয়ে গেলাম মায়ের কাছে নাস্তা করার জন্য।
বলি মা নাস্তা দাও।
মা তখন হাসিয়ে বলেন,বাবা আজ ভাবছি তুই ঘরে আছিস, তাই আমি রুটি বানাবো না। তুই একটু কষ্ট করে দোকান থেকে নিয়ে আয় না।
রাগটা তখন চরম।
তারপরও মা তো রাগা কি আর যায়?
আচ্ছা দেন বলে মন খারাপ করে দোকানের দিকে ছুটলাম। আর ভাবলাম মা আজ পুরো সকালটা শেষ করে দিলো।কি সুন্দর ঘুম হচ্ছিলো, কিন্তু কে বা জানত সে দিন আমার সবচেয়ে সেরা দিনটা হবে
খুব বিরক্তি নিয়ে রাস্তায় হাটছি হঠাৎ আমার সামনে দিয়ে একটা মেয়ে কুয়াশার সাথে একা একা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হাটছে।যেই দেখা সেই ভাল লাগা হয়ে গেল। এর পর থেকে বাসার দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতাম কখন সে আসবে।কিছু দিন যাওয়ার পর একদিন সেই এসে বলল এই যে শুনছেন?
হ্যা বলেন?
আমি না রাস্তায় ব্যাগ হারিয়ে ফেলেছি,নাকি ঘরে রেখে এসেছি বুঝছিনা, আপনি যদি একটু হেল্প করেন মানে আমার রিক্সা ভাড়া দেন, আমি আপনারে কিছুক্ষণ পর বাসা থেকে এনে দিব।
ও হ্যা অবশ্যই।
এই বলে গাড়ি ভাড়া দিলেম।সে আমার নাম্বারটা চেয়ে নিল।
বললো আপনার নাম্বারটা দেন। আমি টাকাটা এনে আপনাকে ফোন দিচ্ছি।
আমিও দিয়ে দিলাম।
প্রায় আধঘণ্টা পর সে টাকা ফেরত দিয়ে গেল। আমাকে আর ফোন দিল না। যেহেতু আমি দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলাম।
এরপর প্রায় হাই হ্যালো চলতে থাকে দেখা হলে। তবে আমি আর আগের মত তার রাস্তায় দাড়ায় না, কারণ একটা লজ্জা এসে গেছে। ও পরিচিত হয়ে গেল তাই।
কিন্ত কিছু যাওয়ার পর ভার্সিটির চাপ ও বেড়ে গেল,খুব ভোরে চলে যাওয়া আর রাতে দেরী করে আসাতে ওর সাথে প্রায় এক মাস দেখা হয় না।
হঠাৎ অচিন নাম্বার থেকে একটা ফোন আসে
হ্যালো
হাই, আপনি তো?
হ্যা আমি তবে কে আপনি? কাকে চান?
আপনাকেই চাচ্ছি আর আমি আমিই!
পরিচয় দেন?
পরিচয় না দিলে কি কথা বলবেন না?
না!
আমি পরিচয় দিলে ও তো আপনি চিনবেন না!
দিয়ে তো দেখেনন!
আমি মেঘলা আর আপনি?
ওমা আপনি আমাকে চেনেন না?
চিনি, দেখেছি তবে, নাম জানি না আর আপনিও আমাকে চেনতে পারছেন না? কি আর করব রাখি তাইলে!"
আরে না, চেনার মত আর কোন পরিচয় থাকলে দেন?আর আমার নাম্বার ফেলেন কোথা হতে?
নাম্বার আপনি নিজেই দিয়েছেন!
আমি! কেমনে কি!
হ্যা আপনি। আচ্ছা চেনার মত একটা পরিচিতি আছে!
কি বলেন দেখি?চেনা যায় কিনা?
ওই যে আপনার কাছ হতে টাকা নিয়েছিলাম ধার।ওই মেয়েটা।
ও আচ্ছা চিনেছি, কি অবস্থা? কি মনে করে ফোন দিলা?
ভাল আছি আর আপনি? কোন প্রব্লেম এ নাই তো!
না, কেন?
এইতো কদিন ধরে দেখছি না তাই।
ও আচ্ছা আসলে একটু ব্যাস্ত আছি তাই।
আচ্ছা সময় হলে একদিন দেখা করবেন?
হ্যা নিশ্চয়।
তারপর দেখা করলাম, ঘুরাফিরা করলাম,ফেরার সময় সে বলে।
আচ্ছা আপনাকে কি তুই বলা যাবে?
মানে কি? কেন?
আপনাকে খুব ভাললাগে তাই।
এই ভাল লাগা প্রেম পর্যায়ে চলে আসে আসে।
এই ভাবে চলতে থাকে আমাদের সব।কিন্তু হঠাৎ একদিন তার ফোনে কল দিলাম, তবে কল যায় না। আমি ভাবলাম সাধারণ কিছু হবে হয়ত তবে এই কল প্রায় এক সাপ্তাহ যাবৎ বন্ধ থাকে। খুব চিন্তাই পড়ে গেলাম। তারপর একদিন কোথাও গেলাম না তাএ অপেক্ষায় থাকি আগের জায়গায়। তবে সে ওখানে ও এলো না। তাই সোজা হাটা দিলাম তার ঘরের দিকে। খোজ নিয়ে জানতে পারলাম তারা ৪ দিন আগে বাসা ছেড়ে চলে যায়।
অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে আর পাওয়া গেলনা।কারণ তার সাথে যোগাযোগ এর মাধ্যম ছিল মোবাইল। তা আজ অফ.
অনেক বার ফোন আর ম্যাসেজ দিয়েছি, তবে কোন উত্তর আসে নাই তাই প্রতি দিন তার কোননা কিছুর অপেক্ষায় ছিলাম তবে পাই নি কিছু, এইভাবে কেটে যায় দিনের পর দিন,তারপর বছরের পর বছর।
এইগুলো তো পাঁচ বছর আগের কথা।
আজ আবার মা এসে বলে, ওরে আমার বাবাটা! তোর লেখাপড়া হতে সব কিছু গেল আমার হাতের উপর।জানিস আমি এখন বুড়ি হয়ে যাচ্ছি,হাতের কাজ আর উঠে না! আর তুই এখন চাকুরী করছিস ভালো। তবে আমাকে একটু মুক্তি দিবি?
:বুঝি নাই মা, কি বলছো?
:আমি না,আর তোকে রান্না করে খাওয়াতে পারব না,আমি দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।
:ও, সরি মা, এখন থেকে দোকান থেকে প্রতিদিন খাওয়ার নিয়ে আসব, ওকে?
:না,আমি দোকানের খাবার খাই না বাবা।
:তাহলে একটা কাজ করো, কাজের বুয়াকে বলব রান্না করে দিতে।
:উফফফ বুঝিস না কেন? আমি নিজেই রান্না করতে অক্ষম নয়।সব রান্না তো আমিই করব।
:তাহলে?
:আরে আমার একটা সঙ্গি দরকার।
:সঙ্গি! আপনার পুরাতন বান্ধবী কারো নাম্বার থাকলে দিও, এদের সাথে যোগাযোগ করব। একদিন বেড়াতে আসতে বলব।
:আরে বোকা তা না।আমার ছেলের বউ আমার সবচেয়ে বড় সঙ্গি হবে। সেই মিষ্টি মামুনিকেই আমি চাই।
:মা,প্লিজ! এখন এইসব কথা বাদ দাও না!
:না বাবা অনেক হয়েছে।আর না গত দুই বছর ধরে তোকে রিকুয়েস্ট করেই যাচ্ছি, আর না। আমি নিজেই নিয়ে আসব, নাকি পছন্দ আছে?
থাকলে বল আমি প্রস্তাব পাঠায়।
:মা প্লিজ আমার কিছুই নাই।
:তুই কি আমার দুঃখ বুঝবি না বাবা ? আমি ক দিন আর বাঁচব বল?
:আচ্ছা মা, তোমার ইচ্ছে যা হয়, কর।
:ওকে বাবা
তার পরের দিন মা আমাকে উনার পছন্দ একটা মেয়ে দেখে আসতে বলল।আমি মাকে বললাম আমার দেখা লাগবে না উনার পছন্দ আমার পছন্দ।
তারপর আমাকে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়।আমি গেলাম। সবাই বসে আছে, খুব হাসাহাসি করছে তবে আমি ভাবতে লাগলাম জীবনে যাকে ভালবাসিলাম তারে তো পেলাম না।কেন যে সে এলো আমার জীবনে, না আসলে কি হত!
আচ্ছা যাক পাত্রী এল আমি নিচের দিকে থাকিয়ে আছি। মা কানে কানে বলল বাবা পাত্রী তোর পছন্দ হয়েছে? আমি হ্যা সূচক উত্তর দিলাম যদিও বা আমি মেয়েটিকে একটি বার ও দেখি নাই। মা বলেন, আমারো পছন্দ হয়েছে, ধর আংটি পড়িয়ে দেয়।হাতে আংটি ধরিয়ে দিল।আমি কার্ন্নাথ চোখে আংটি পড়িয়ে দিতে গেলাম,আর ওর হাত ধরলাম তারপর..
আমি চমকে উঠি,কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমি থ হয়ে যায়।কারণ যে মেয়েটি ঘুমটা তোলেছে, আর যাকে আমি আংটি পড়াচ্ছি সে আর কেউ নয় সে আমার.
স্বপ্ন ও ভাবি নি তোকে আজ পাব!
মা কই পেলা ওকে?
:আরে বোকা আমি তো মা, বুঝিতো আমার বাবুটা কি চাই।
দেখ আমি প্রায় দেখতাম তুই ওর জন্য মন খারাপ করে আছিস। তবে একদিন ওর বাবার চিঠি পেয়ে আমি ওদের ঘরে এসেছিলাম কারণ ওখানে লিখা ছিল,"মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে ফেলতে চেয়েছিলাম, মেয়ে রাজি হচ্ছে না,সে বলেছে প্রান যাবে তবে এই ছেলেকে ছাড়া অন্য কারো সাথে বিয়ের আসরে বসবে না।"
তাই আমি ভাবলাম যে মেয়ে আমার ছেলের জন্য নিজের প্রাণ দিতে চাই,তাকেই আমার ঘরের বউ য়ে মানায়। ঘরের লক্ষি ঘরে মানায় অন্য জায়গায় না।আর মেয়েটাকে দেখে আমার মনে হল আমার ছেলের পছন্দ খুব ভাল, ঠিক আমার মনের মত। তাই নিয়ে আনার প্রস্তুতি নিলাম।এতোদিন চেয়েছিলাম তুই কিছু বলবি সেই আশায়, কই তুই একবার ও তো বলিস নাই!!!
:মা ওকে অনেক খুজছিলাম তবে পায় নাই.
তাই তোমাকে কি করে বলব বুঝতে পারছিলামনা।
এই কোথায় ছিলি তুই!!অনেক খোঁজেছি তোকে.
কেমনে পারলি আমায় ছেড়ে যেতে.
কেমনে পারলি আমায় ছেড়ে থাকতে
No comments:
Post a Comment